রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ

‘সংক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মতে’ বন কর্মকর্তাকে হত্যা : পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কেটে সংঘবদ্ধ মাটির পাচারকারি চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি অভিযান অব্যাহত রাখায় ‘সংক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মতে’ ডাম্পার ট্রাক চাপায় বনবিট কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় দায়ের মামলার প্রধান আসামি মো. বাপ্পীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মাটি পাচারকারি চক্রের সদস্যদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টায় উখিয়া থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন, পুলিশের উখিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার ( এএসপি ) মোহাম্মদ রাসেল।

গ্রেপ্তার মো. বাপ্পী (২৩) উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মো. কাশেমের ছেলে। সে ঘাতক ট্রাকটির চালক।

এর আগে গত ১ এপ্রিল ভোরে উখিয়ার হরিণমারা এলাকা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে মামলার এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫) কে।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, গত মাসখানেকের বেশি সময় ধরে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে পাহাড় কেটে মাটির পাচার করে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্র। আর পাহাড় কেটে মাটি বিক্রিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার ছিলেন বনবিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান সজল। ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে অভিযান চালিয়ে তিনি মাটি পাচারকারি চক্রের ৫ টি ডাম্পার ট্রাক জব্দ এবং কয়েকটি মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে চক্রটির লোকজন তার উপর ক্ষুদ্ধ ছিল। গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বনবিভাগের অভিযানে ট্রাক জব্দ এবং মামলা দায়ের করায় এজাহারভূক্ত ১০ নম্বর আসামি কামাল উদ্দিন ড্রাইভারসহ মাটি পাচারকারিরা বনবিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানের উপর ক্ষুদ্ধ ছিল। তারা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এবং নানাভাবে তাকে ( সাজ্জাদুজ্জামান ) হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। এমন কি তারা সাজ্জাদুজ্জামানকে প্রাণে মারারও হুমকি দেয়। “

সহকারি পুলিশ সুপার বলেন, “ ঘটনার দিন গভীর রাতে উখিয়া উপজেলার হরিণমারা এলাকার সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে মাটি পাচারের খবরে বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান সহকর্মি আলী আহমদকে সঙ্গে নিয়ে মোটর সাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এতে হাতনাতে একটি ডাম্পার ট্রাক করে মাটি পাচার করতে দেখে থামার জন্য নির্দেশ দেন। এসময় ট্রাকটির চালক তাদের ( বনকর্মিরা ) বহনকারি মোটর সাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে সাজ্জাদুজ্জামান নিহত হন এবং তার সহকর্মি আলী আহমদ আহত হয়েছেন। “

ঘটনার সময় ট্রাক চালক বাপ্পীর পাশের সিটে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার বসা ছিল এবং তার ইন্ধনে বন কর্মকর্তাদের বহনকারি মোটর সাইকেলটি চাপা দেয়া হয়েছিল সাংবাদিকদের তথ্য দেন মোহাম্মদ রাসেল।

গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাহাড় কেটে মাটি পাচারকাজে জড়িত চক্রটির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে এবং এসব তথ্য যাচাই বাছাই করে করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। ওইদিন রাতে এক পর্যায়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা থেকে ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এরপর গত ১ এপ্রিল ভোরে রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সহকারি পুলিশ সুপার রাসেল জানান, ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের বন্দর থানা এলাকায় মামলার প্রধান আসামি ও ঘাতক ট্রাকটির চালক বাপ্পী আত্মগোপন অবস্থায় রয়েছে খবরে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এতে সন্দেহজনক স্থাপনাটি ঘিরে ফেললে সে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

গত ৩১ মার্চ মধ্যরাতে উখিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে অভিযানে গিয়ে ‘মাটি পাচারকারিদের ড্রাম্প ট্রাকের চাপায়’ বনবিট কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) নিহত হন।

তিনি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।

এ ঘটনায় আহত হন বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭), তিনি টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মজ্ঞুরের ছেলে।

এ ঘটনায় পরের দিন ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া রেজ্ঞ কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

এর আগে এই মামলার ৫ নম্বর আসামি হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫)কে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888